Atrai

আত্রাই 

আত্রাইয়ের  প্রাচীন নাম আত্রেয়ী>আত্রেই। ব্রহ্মপুত্র নদীর সর্বপশ্চিমের শাখানদী দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলা থেকে করতোয়া নদী আত্রাই নাম ধারণ করেছে। চিরিরবন্দর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে আত্রাই নদী বিভক্ত হয়ে এই বন্দরের দক্ষিণ-পশ্চিমে পুনরায় মিলিত হয়েছে। এর পশ্চিমের অংশ গোবুরা এবং পূর্বের অংশ কংক্রা নামে পরিচিত। আত্রাই নদী দিনাজপুর জেলার জয়গঞ্জ, বীরগঞ্জ, কোতোয়ালি হয়ে চাঁদপুরের কাছে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রবেশ করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে বালুরঘাট শহরের পাশ দিয়ে খিদিরপুর পাটনীটোলা ও সীমান্তের ডাঙ্গিগ্রাম হয়ে আবার বাংলাদেশে রাজশাহীর চৌঘাট মৌজার অদূরে প্রবেশ করেছে। এখান থেকে নওগাঁ ও নাটোর জেলা অতিক্রম করে বর্তমান চলনবিলের পশ্চিম পাশ দিয়ে কাছিকাটা বন্দরের সন্নিকটে গুমানি নাম ধারণ করে পাবনা জেলায় প্রবেশ করেছে। পাবনা জেলায় আত্রাই নদী চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুরাসাগর নদীতে মিলিত হয়েছে। অতঃপর বাঘাবাড়ীর কাছে যমুনা নদীতে পড়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৮৫ কিমি।

মোগল শাসনামলে রাজশাহী জেলার আত্রাইয়ে কোনো রকম পরিবর্তন হয়নি। ১৬০৮-০৯ সালে বুয়ালিয়ার কাছে বারাহী বেয়ে আত্রাইয়ের যে খাত দিয়ে বঙ্গের সুবাদার ইসলাম খান নাজিরপুর (নাজিপুর) ও শাহপুরে পৌঁছেছিলেন, বর্তমানে সেই আত্রাইতীরে স্থান দুটি অতীতের নানান স্মৃতি-সমৃদ্ধির প্রাচীনত্বের সাক্ষ্য দিচ্ছে। মোগলপূর্বকালে আত্রাই তার গতি পরিবর্তন করে। পাল আমলের প্রাচীন কীর্তিগুলো আজও অবশিষ্ট আছে সেগুলোর মধ্যে জগদ্দল মহাবিহার, যোগীঘোপা, রামাবতী (আমাতি), আরানগর প্রভৃতি। এসব স্থান প্রাচীন আত্রাইয়ের গতিপথের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল বলে ধারণা করা হয়। একসময় নওগাঁ জেলার পত্নীতলা থানার আগ্রাদ্বিগুণের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতো আত্রাই। বর্তমানে সেখান থেকে প্রায় ১১.৫০ কিমি দূর দিয়ে আত্রাই প্রবাহিত হচ্ছে। এখানকার ঘুকশীর বিল ছিল আত্রাইয়ের প্রাচীন খাত। এই বিলের পশ্চিম তীরে প্রাচীন কীর্তিগুলোর মধ্যে রামপালের রামাবতী, যোগীঘোপা অবস্থিত। পূর্ব তীরে অবস্থিত জগদ্দল মহাবিহার, চাঁদড়া প্রভৃতি বৌদ্ধ নিদর্শন।

আগে নদীটি আতাইকুলার কাছে ইছামতি নদীর সাথে মিলিত ছিল। আত্রাই নদীর কূলে জনবসতি গড়ে ওঠার কারণে আত্রাইকুলা>আতাইকুলা নাম হয়েছে। আত্রাই নদীতীরে যে প্রধান প্রধান নগর-হাটবাজার গড়ে উঠেছে, সেগুলো হলো- রাঙামাটি, পত্নীবালা, নাজিরপুর, পাঁচুপুর, চাঁচখোর, মহাদেবপুর, কালিকাপুর, প্রসাদপুর, বান্দাইখাড়া, আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন, সাহেবগঞ্জ, খাজুরা, ডাঙ্গাপাড়া, আতাইকুলা লালোর ইত্যাদি। এই নদীর ওপর উত্তরবঙ্গ রেলওয়ের একটি লোহার সেতু আছে। সেতুর কাছেই মালঞ্চ স্টেশন।

Atrai

The Atrai River, historically known as Atrayi or Atrei, originates as the westernmost branch of the Brahmaputra in the Khansama Upazila of Dinajpur district. The river splits in the northwest of Chirirbandar Upazila, rejoining southwest of the town. Its western branch is known as Gobura and the eastern branch as Konkra. Flowing through Joyganj, Birganj, and Kotwali in Dinajpur, the Atrai enters South Dinajpur district in West Bengal near Chandpur. In South Dinajpur, it passes the town of Balurghat, flows through Khidirpur, Patnitola, and Dhangigram on the border, and re-enters Bangladesh near Chowghat Mouza in Rajshahi. From there, it traverses Naogaon and Natore districts, skirting the western edge of the Chalan Beel, and is renamed Gumani near Kachikata port before entering Pabna district. In Pabna, the Atrai flows through Chalan Beel and merges with the Hurasagar River, which then flows into the Jamuna River near Baghabari. The river spans approximately 385 kilometers.

During the Mughal era, the Atrai in Rajshahi district remained largely unchanged. In 1608-09, Bengal’s governor Islam Khan traveled along the Atrai near Bualia to reach Nazipur and Shahpur, sites rich with historical significance today. Before the Mughal period, the river altered its course. Ancient relics from the Pala era, including Jagaddal Mahavihara, Yogighopa, Ramavati (Amati), and Aranagar, are believed to be connected to the ancient Atrai. Historically, the river flowed through Agradvigon in Patnitala Thana of Naogaon. Today, the Atrai flows about 11.5 kilometers from its old path. The Ghukshir Beel in this area was part of the ancient Atrai riverbed, with relics like Ramavati of Rampal and Yogighopa on its western bank, and Jagaddal Mahavihara and other Buddhist sites on the eastern bank.

In the past, the Atrai River merged with the Ichamati River near Ataikula, leading to the name Ataikula for the settlement along its banks. Major towns and markets developed along the Atrai include Rangamati, Patnibala, Nazipur, Panchupur, Chanchkhor, Mahadebpur, Kalikapur, Prasadpur, Bandaikhara, Atrai Railway Station, Sahebganj, Khajura, Dhangapara, and Ataikula Lalor. The river is crossed by an iron bridge of the Northern Bengal Railway near Malancha Station.